ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​সেই জাহাজ এখন এখন ভারতের প্যারাদ্বীপে

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১১-১২-২০২৪ ০২:২৪:০২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১১-১২-২০২৪ ০২:২৪:০২ অপরাহ্ন
​সেই জাহাজ এখন এখন ভারতের প্যারাদ্বীপে
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ৭৯ জন জেলে-নাবিকসহ ভারতীয় কোস্ট গার্ডের ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ২ শিপিং জাহাজ এখন প্যারাদ্বীপে। ভারতের ওড়িশা রাজ্যের জগৎসিংহপুর জেলার অন্তর্গত এই প্যারাদ্বীপ বন্দরে তাদের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড। এদিকে জেলে ও নাবিকদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা ভিড় করছেন চট্টগ্রামে জাহাজ মালিকদের অফিসে। দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে তাদের ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের নিয়ে যাওয়া জাহাজ দুটির মধ্যে একটি এফ ভি লায়লা-২। এই ফিশিং জাহাজটির অপারেশন কোম্পানির নাম ‘এস আর ফিশিং’। অপর ফিশিং জাহাজ এফভি মেঘনা-৫ এর অপারেশন কোম্পানির নাম সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেড। এফভি লায়লা-২ জাহাজাটিতে নাবিকসহ ৪২ জন এবং এফভি মেঘনা-৫ এ ৩৭ জন জেলে ছিলেন।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ  বলেন, ‘এফভি মেঘনা-৫ ফিশিং জাহাজে গত ২৪ নভেম্বর মাছ ধরার জন্য সাগরে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ফিরে আসার কথা ছিল। এরই মধ্যে সোমবার দুপুর ১১টা কিংবা ১২টা নাগাদ জাহাজটিকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড। কী কারণে তাদের ধরে নিয়ে গেছে, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সব দফতরে অবহিত করা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘খুলনা অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ভারতীয় কোস্টগার্ড ধরে নিয়ে গেছে। এ সময় এফভি লায়লা-২ নামে আরও একটি মাছ ধরার জাহাজ নিয়ে গেছে। জাহাজ দুটি ভারতের উড়িষ্যার প্যারাদ্বীপ নামক এলাকায় নোঙর করেছে বলে জানতে পেরেছি।’
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে ভারতের পক্ষ থেকেও। ভারতীয় কোস্ট গার্ডের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে জাহাজ দুটির ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ার জন্য জাহাজ দুটিকে প্যারাদ্বীপে নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংস্থাটির দাবি, বাংলাদেশি জাহাজ দুটি ভারতের জলসীমায় প্রবেশ করে অননুমোদিতভাবে মাছ ধরছিল।
ভারতীয় কোস্ট গার্ডের নিয়ে যাওয়া আরেক জাহাজ এফ ভি লায়লা-২ এস আর শিপিং-এর মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটির সিএফও মিন্টু সাহা  বলেন, ‘লায়লা-২ জাহাজটি গত ২৭ নভেম্বর জাহাজটি মাছ ধরার জন্য সাগরে যায়। ২০ ডিসেম্বর সাগর থেকে মাছ ধরা শেষে ফিরে আসার কথা ছিল। গতকাল শুনলাম আমাদের জাহাজ ভারতীয় কোস্ট গার্ড ধরে নিয়ে গেছে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছি। এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি।’তিনি বলেন, ‘খুলনা অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে যে স্থানে মাছ ধরা হচ্ছিল, সেখান থেকে প্রায় সময় মাছ ধরা হয়। কেন তাদের ধরে নিয়ে গেছে. তা বুঝতে পারছি না।’
এদিকে, নাবিক-জেলেসহ ভারতীয় কোস্ট গার্ড জাহাজ ধরে নিয়ে গেছে এমন খবরে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এফভি মেঘনা-৫ জাহাজের অফিসে ভিড় করছে স্বজনরা। মো. আমীর হোসেন নামে এক স্বজন  বলেন, ‘এফ ভি মেঘনা-৫ জাহাজে আমার ছেলে রিয়াজ, দুই ভাতিজা জামাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন আছে। তারা যেদিন জাহাজে উঠেছিল সেদিন কথা হয়। সাগরে নেটওয়ার্ক থাকে না, এ কারণে আর কথা হয়নি। শুনেছি তাদের জাহাজসহ ভারতীয় বাহিনী নিয়ে গেছে। কী কারণে নিয়ে গেছে, তারা এখন কেমন আছেন, তা জানতেই অফিসে এসেছি।’ 
কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগর এলাকার বাসিন্দা মো.হারুন নামে অপর এক স্বজন জানান, ‘আমার ছেলে রাকিব ওই জাহাজে আছে। আমার ছেলে কেমন আছে, তারা কবে ফিরে আসবে তা জানতে এসেছি।’ মো. বেলাল নামে অপর এক স্বজন জানান, ‘আমার ছোট ভাই এফভি মেঘনা-৫ জাহাজে আছে। খবর পেয়েছি তাদের নাকি জাহাজসহ ধরে নিয়ে গেছে। ওই জাহাজে প্রচুর মাছ আছে। আমার ভাই আগেও মাছ ধরার জন্য জাহাজে গিয়েছিল। তারা ২৫ দিনের জন্য গেলেও মাছ ধরা হয়ে গেলে ১৫-১৬ দিনে চলে আসে।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিচালক (সমুদ্রিক) মো. আবদুস ছাত্তার  বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবহিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মাছ ধরার জাহাজসহ নাবিক-জেলেদের নিরাপদে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
 
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ